সুস্বাস্থ্যের জন্য নামাজ এক কার্যকরী টনিক। ওজু থেকে শুরু করে নামাজ আদায় সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি কাজই মানুষের সুস্থতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এবার নামাজ আদায়ে শারীরিক ও মানসিক উপকারিতার কথা উঠে এসেছে বিজ্ঞানের গবেষণায়।
ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্য প্রতি দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। এটি মহান আল্লাহর নির্দেশ। এ বিধান লঙ্ঘনে রয়েছে কঠোর শাস্তির ঘোষণা। অথচ নামাজ পড়লে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অনেক উপকার সাধিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিংহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানিয়েছেন, নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে সুস্থ থাকা যায়। নামাজ পড়ার মাধ্যমে মানুষ শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারে।
গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘যদি নিয়মিতভাবে নামাজ পড়া হয় তবে বেক পেইন তথা পিঠের ব্যথা কমে যায়। নিস্তেজ ও ঝিম ধরা শরীরে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক হয়।
নামাজ পড়ার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদকম্পনও কমে যায়। যা মানুষের পেশীকে শিথিল করতে সাহায্য করে।
গবেষকরা দেখিয়েছেন, ‘যদি কেউ (যথাযথভাবে) রুকু করতে পারে তাহলে তার পিঠে ব্যথা থাকবে না, রুকুতে গেলে মানুষের পিঠ সমান্তরাল হয়। কিছু সময় পিঠ সমান থাকে।
নামাজের রুকু আদায় করার মাধ্যমে পিঠ, পায়ের উরু এবং ঘাড়ের পেশীগুলো সম্পূর্ণভাবে সম্প্রসারিত হয়। রক্তপ্রবাহ যথাযথভাবে চলতে থাকে। শরীরের ওপরের অংশে রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক মাত্রা ফিরে আসে।
সেজদা সম্পর্কে গবেষকরা জানান, ‘মানুষ যখন সেজদায় যায়, তখন শরীরের সব হাড়ের জোড়াগুলো নমনীয় হয়। হাড়ের ওপর যে চাপ পড়ে তা স্বাভাবিক ও শিথিল হয়। সেজদার জন্য জমিন মাথা রাখার কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়। উচ্চ রক্ত চাপ কমে যায়।
ধীরস্থিরভাবে সেজদা আদায়ের মাধ্যমে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শরীরের ভারসাম্য ফিরে আসে। শ্বাস-প্রশ্বাসে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসায় মানুষ স্বস্তি লাভ করে। সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য নামাজ অনেক উপকারি। এ নামাজের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে।
কর্মক্ষম উজ্জীবিত মানসিকতা লাভে নামাজ আল্লাহর এক মহা নেয়ামত। বান্দার জন্য অন্যতম রহমতও বটে। তাইতো আল্লাহ তাআলা মানুষকে সার্বিকভাবে উজ্জীবিত করতে নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। আর তা না পড়লে শাস্তির বিধানও রেখেছেন।
বিশ্বের প্রায় ১৮০ কোটি মুসলিমের বসবাস। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে নামাজ আদায় করা আল্লাহর নির্দেশ ও ফরজ ইবাদত। যা মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন রাখে।
সুতরাং নামাজের ব্যাপারে অবহেলা নয়, শাস্তির ভয়ে নামাজ আদায় নয়, বরং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা লাভে নামাজ পড়া আবশ্যক।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি ও শারীরিক-মানসিক প্রশান্তি ও উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
important news